শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার চাঞ্চল্যকর কলেজছাত্র রাজ্জাক হত্যা মামলায় ৮ বছর আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী সাজু আহম্মেদকে গ্রেফতার করেছে র্যাব ১৪- এর জামালপুর ক্যাম্পের সদস্যরা। আজ রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে গাজীপুর জেলার পৌর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করার পর দুপুরে নালিতাবাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব সুত্র জানায়, নিহত আব্দুর রাজ্জাক (২০) একজন কলেজ পড়ুয়াছাত্র সে শেরপুর জেলার সদর উপজেলার যোগনীমুড়া গ্রামের সোহরাব আলীর ছোট ছেলে। বিগত ২০১৫ সালের ২০ ফেব্রæয়ারী সকালে রাজ্জাক ও তার সহপাঠিরা মিলে নালিতাবাড়ী উপজেলার বিনোদন কেন্দ্র মধুটিলা ইকোপার্কে বেড়াতে যান। একই দিন বিকেলে র্দূবৃত্তরা মিলে দেশীয় অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ছিনতাই এর উদ্দেশ্যে তাদের উপর অতর্কিত আক্রমন করে ভিকটিম আব্দুর রাজ্জাকের বুকে ও পেটে ধরালো চাকু দিয়ে আঘাত করে। আঘাতের ফলে ভিকটিম রাজ্জাক ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে লুটিয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে অন্যান্য সহপাঠিরা ডাকচিৎকার করলে আসামীরা পালিয়ে যায়। এসময় তাদের ডাকচিৎকারে ঘটনাস্থলে স্থানীয় লোকজন সবাইকে উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন ভিকটিমের বাবা ও থানা পুলিশকে খবর দিলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভিকটিমকে মৃত অবস্থায় পেয়ে সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করেন এবং ময়না তদন্তের জন্য ভিকটেমের লাশ শেরপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
পরবর্তীতে ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় অজ্ঞাত নামা ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে বিজ্ঞ আদালত ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল তারিখে নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বুরুঙ্গা পোড়াবাড়ী গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে আসামী সাজু আহম্মেদ ওরফে খোকনকে (৩০) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন। একইসাথে অনাদায়ে আরো ০৪ মাসের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন। ঘটনার পর থেকেই আসামী সাজু আহম্মেদ ৮ বছর দেশের বিভিন্নস্থানে আত্মগোপনে ছিল। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তিনি গাজীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় গার্মেন্টস শ্রমিক হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। পরে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে র্যাব- ১৪ জামালপুর ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার আশিক উজ্জামানের নেতৃত্বে র্যাবের একটি অভিযানিক দল রোববার সকালে গাজীপুর জেলার পৌর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করেন। পরে আসামী সাজু আহম্মেদকে নালিতাবাড়ী থানায় হস্তান্তর করা হয়।