আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় ঢাকার পশ্চিমাদের বিবৃতির প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ বলেই তারা একটা মগের মুল্লুক পেয়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’
বুধবার (১৯ জুলাই) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় বিদেশি মিশনগুলোর বিবৃতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা সম্পর্কে (বিবৃতি) আমি জানি না। একটি দেশ সম্পর্কে আমি বলতে চাই, আমেরিকার নিউইয়র্কে যখন-তখন লোক মেরে ফেলা হয়। তারা কি স্টেটমেন্ট দেয় কখনো? জাতিসংঘ কখনো বলেছে আমেরিকাতে লোক মরে যায় কেন?
চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের কেমব্রিজে পুলিশের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত শিক্ষার্থী সাইদ ফয়সাল ওরফে আরিফের প্রসঙ্গ টেনে মোমেন বলেন, একটা বাঙালি ছেলে মারা গেল। এতদিন হলো জাতিসংঘ কখনো বলেছে ওই ছেলের তদন্ত কতদূর হয়েছে? কিংবা রাষ্ট্রদূতরা দলবেঁধে কোনো বিবৃতি দিয়েছেন?
হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাকে মেরেছে, কে মারিয়েছে এটা ইনভেস্টিগেট করে দেখতে হবে। এমনও তো হতে পারে কেউ কেউ এটাতে যুক্ত ছিল একটা অস্থিতিশীলতা তৈরি করার জন্য, হয়তো কেউ আমাদের আগামী নির্বাচন চায় না। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এ ধরনের অকাম-কুকাম শুরু করে দিয়েছে।
হিরো আলমের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে ইইউ এবং ১২টি দেশের দূতাবাস ও হাইকমিশন। আজ বুধবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস।
ইইউ ছাড়া বাকি দেশগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড।
বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, আমরা গত ১৭ জুলাই ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের ওপর হামলার নিন্দা জানাই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আমরা পূর্ণ তদন্ত ও দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানাই। আগামী নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিশ্চিত করতে হবে।
হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় এরই মধ্যে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বিবৃতি দিয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনা নিরপেক্ষভাবে তদন্তের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
প্রসঙ্গত, সোমবার ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণের শেষের দিকে বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল ভোটকেন্দ্রের সামনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের ওপর হামলা চালানো হয়। মারধর থেকে বাঁচতে একপর্যায়ে হিরো আলম দৌড়ে পালিয়ে যায়। হামলাকারীরা এ সময় তাকে পেছন থেকে ধাওয়া দেয়। একপর্যায়ে তিনি বনানীর ২৩ নম্বর সড়কে গিয়ে একটি রিকশায় ওঠেন। পরে গাড়িতে করে চলে যান।
এই আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ৫ মাস আগে এ উপনির্বাচন হয়।