মহান মুক্তিযুদ্ধে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার রাঙামাটি খাটুয়াপাড়া গ্রামে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ কোম্পানি কমান্ডার নুরুন্নবী মোহাম্মদ নাজমুল আহসানের নামে একটি চত্বর উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে উপজেলার ঐতিহাসিক কাটাখালী সেতুর পাশের স্থানটি ‘শহীদ নাজমুল চত্বর’ হিসেবে উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার। চত্বরটিতে দৃষ্টিনন্দন মাশরুমের ছাতা, ফোয়ারা, ফুলের বাগান ও বসার বেঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ। এতে বক্তব্য দেন শেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম হিরু, শেরপুর সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান আকন্দ, ঝিনাইগাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সুধীজন ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের ২০ জানুয়ারি শেরপুরের নালিতাবড়ি উপজেলার বরুয়াজানী গ্রামে মায়াবী মুখশ্রী নিয়ে জন্ম নেয় নুরুন্নবী মোহাম্মদ নাজমুল আহসান। ১৯৬৫ সালের এসএসসিতে দুটি বিষয়ে লেটারসগ প্রথম বিভাগ নিয়ে উত্তীর্ণ হন। তিনি বায়লাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন।
পরে ১৯৭১ সালের ৪ জুলাই (শনিবার) ভোরে কোম্পানি কমান্ডার নাজমুল আহসানের নেতৃত্বে ৫৩জনের মুক্তিযোদ্ধার দল অবস্থান নেন মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের রাঙামাটিয়া গ্রামে আতর আলীর বাড়ীতে। পরিকল্পনা মতো ৫ জুলাই রাতে পাকিস্তানি বাহিনী যাতায়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ‘কাঁটাখালী সিতু’বিস্ফোরক দিয়ে উড়িযে দেওয়া হয়। পরদিন ৬জুলাই সোমবার সকালে রাঙামাটি খাটুয়াপাড়া গ্রামে পাকিস্তানি বাহীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে কোম্পানি কমান্ডার ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অনুষদের শেষ বর্ষের মেধাবী ছাত্র নাজমুল আহসান, তার চাচাত ভাই মোফাজ্জল হোসেন ও ভাতিজা আলী হোসেন শহীদ হন।