ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এডিস মশা খুব অল্প পানিতেও ডিম পাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান কীটতত্ত্ববিধ ডা. ভুপেন্দর নাগপাল। তিনি বলেন, ‘মাত্র এক চা-চামচ পানিতেও এডিস মশা ডিম পাড়ে। যে ডিম পানি ছাড়াও প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকতে পারে।’
সোমবার (৫ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডা. ভুপেন্দর নাগপাল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বাসা-বাড়িতে পানি জমিয়ে রাখার পাত্র, টায়ার, ছাদ, ঘরের ভেতরে থাকা আর্টিফিসিয়াল ঝরনায় ডিম পাড়ে।’
তিনি বলেন, ‘এডিস মশা কেবল বর্ষা মৌসুমে ডিম পাড়ে- এমন ধারণা ভুল। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে- এই মশা বছরের ৩৬৫ দিনই ডিম পাড়ে। এসব ডিম একবছরেও নষ্ট হয় না। আর পানি পেলে সেই ডিম থেকেই মশা জন্ম নেয়। তাই ভেক্টর কন্ট্রোল করা ছাড়া এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’
এই চিকিৎসক বলেন, ‘এডিস মশা ঘরের কোণায়, অন্ধকারের আর্দ্রতাপূর্ণ জায়গায় যেমন পর্দার পেছনে, খাট ও টেবিল চেয়ারের নিচে থাকতে পছন্দ করে। আর এডিসের লার্ভা ধ্বংস করতে একগ্রাম টেমিফস ১০লিটার পানিতে খুব কার্যকরী। এটি ব্যবহার করতে পারলে সেখানে অন্তত তিন সপ্তাহের ভেতর পুনরায় এডিস জন্মাবে না। যদি শহরের নির্মাণাধীন ভবনের পানি জমে থাকা স্থানগুলো ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পরিষ্কার করা যায়, তাহলে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব।’
এসব নির্মাণাধীন ভবনে একাধিক ব্রিডিং স্পট থাকে উল্লেখ করে ডা. নাগপাল বলেন, ‘সপ্তাহে একদিন যদি কেরোসিন বা ডিজেল জাতীয় তেল এখানে স্প্রে করা যায়, তাহলে এডিস ধ্বংস করা সম্ভব। একইসঙ্গে একেকটি বাড়িতে অন্তত ১৫ থেকে ২০টি করে ব্রিডিং স্পট থাকে। অথচ এসব পরিষ্কার করতে একঘণ্টা সময় লাগার কথা।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা, ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু বিষয়ক কার্যক্রমের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. এম এম আকতারুজ্জামান প্রমুখ।