দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণের সময় আরও দুই সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে।
সোমবার (২০ জুন) ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আগামী ২২ জুন পর্যন্ত ফরম পূরণের তারিখ ধার্য থাকলেও তা বাড়িয়ে ৬ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে। ফরম পূরণের ফি জমা দেওয়া যাবে ৭ জুলাই পর্যন্ত।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম আমিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের সময় আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হলো। সোনালী সেবার মাধ্যমে ফি পরিশোধের সময় ৭ জুলাই পর্যন্ত পুনর্নির্ধারণ করা হলো। উল্লেখিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠ, শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে চার মাস পিছিয়ে আগামী ২২ আগস্ট থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা ছিল। তবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার কারণে সরকার এরইমধ্যে এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত করেছে। এর ধারাবাহিকতায় পেছাতে পারে এইচএসসি পরীক্ষাও।
৮ জুন থেকে এ পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ শুরু হয়, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২২ জুন। এবার তা দুই সপ্তাহ বাড়িয়ে ৬ জুলাই করা হয়েছে।
রেজিস্ট্রেশন ফি
এইচএসসিতে এ বছর বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন ফি দুই হাজার ৩৩০ টাকা আর ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক শাখায় নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৭৭০ টাকা।
শিক্ষাবোর্ড জানিয়েছে, কোনো শিক্ষার্থীর প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষ মিলে মোট ২৪ মাসের বেশি বেতন নেওয়া যাবে না। কোনো অবস্থায় নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যাবে না। এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য দৃষ্টিগোচর হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ফরম পূরণ প্যানেল বন্ধ করাসহ প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জিপিএ উন্নয়ন
যেসব পরীক্ষার্থী ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এর কম পেয়েছে, তারা জিপিএ উন্নয়নের জন্য পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীকে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় নির্ধারিত সব বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। জিপিএ উন্নয়নের ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন নবায়ন করা যাবে না।
যেসব পরীক্ষার্থী এক বা দুই বিষয়ের পরীক্ষা দিয়ে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তারা কখনোই জিপিএ উন্নয়ন পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন না।
পরীক্ষার সিলেবাস
এইচএসসিতে একটি বিষয় (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) বাদ দেওয়া হয়েছে। বাদ দেওয়া বিষয়ে গতবারের মতো এবারও সাবজেক্ট ম্যাপিং করে নম্বর দেওয়া হবে। অর্থাৎ, শিক্ষার্থীদের বাংলা, ইংরেজি গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিন বিষয় ও ঐচ্ছিক একটি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। পরীক্ষার সময় দুই ঘণ্টা।
এতে আরও বলা হয়েছে, যেসব পরীক্ষার্থী ২০১৯/২০২০/২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় এক/দুই বিষয়ে (চতুর্থ বিষয় বাদে) অকৃতকার্য/অনুপস্থিত হয়েছে, রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকলে তারা ২০২২ সালে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য/অনুপস্থিত বিষয়/বিষয়সমূহের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। আংশিক বিষয়ে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীরা কখনই চতুর্থ বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। তবে পরীক্ষার্থীগণ ইচ্ছা করলে এক/দুই বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করে চতুর্থ বিষয়সহ ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সব বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে।
শুধুমাত্র তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ের অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীকে অবশ্যই ফরম পূরণ করতে হবে। ফরমপূরণ ব্যতীত তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ের অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীর ফলাফল প্রকাশের সুযোগ নেই।
২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় এক বিষয়ে অকৃতকার্য/অনুপস্থিত প্রাইভেট পরীক্ষার্থীরা ২০২২ সালের এক বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। ২০১৯/২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় এক/দুই বিষয়ে অকৃতকার্য/অনুপস্থিত হয়ে, ২০১৯/২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় ওই এক/দুই বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণকালে বহিষ্কার অথবা অভিযুক্ত হয়েছে এবং শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০১৯/২০২১ সালের পরীক্ষা বাতিল হয়েছে, রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ থাকলে তারা ২০২২ সালের সব/এক/দুই বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।