ঈদ মানে খুশি, আনন্দ ও সারাদিন হৈ-হুল্লোড় আর দূরে কোথাও ঘুরে বেড়ানো। কিন্তু কেউ কেউ আবার দূরে কোথাও না গিয়ে কাছেই পেতে চান বিনোদন। যারা নদী আর সবুজকে ভালোবাসেন তারা বরাবরই ছুটে যান নদী ও সবুজ প্রকৃতির কাছে। শেরপুরের নকলা উপজেলায় তেমন কোন বিনোদন কেন্দ্র বা পার্ক না থাকায় বিনোদন স্পট হয়ে উঠেছে শেরপুরের নালিতাবাড়ি নাকুগাঁও স্থলবন্দর-ময়মনসিংহ ন্যাশনাল হাইওয়ের নকলা উপজেলার গড়েরগাঁও থেকে পাইস্কা পর্যন্ত নির্মিত বাইপাস সড়ক ও ব্রীজ। তার সাথে রয়েছে মনোরম পরিবেশের প্রাকৃতিক হাওয়া।
নকলার এ বাইপাস সড়কে রয়েছে মনোরম পরিবেশের ব্রীজ। দুই পাশে সবুজ ধান ক্ষেতের মাঝ দিয়ে চলে যাওয়া এ ব্রীজকে ঘিরে শুরু হয়েছে সব বয়সের মানুষের বিনোদন কেন্দ্রে। তাই স্থানীয় ও আশপাশের উপজেলার বিনোদন ও প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে খুব প্রিয় এ বাইপাস ও বাইপাস ব্রীজ। এছাড়া উপজেলার চন্দ্রকোনায় ব্রীজ ও সুইচগেইট এবং নালিতাবাড়ী সীমানাস্থ রাবার ড্র্যাম এ এখন স্থানীয় হাজার হাজার মানুষের বিনোদনের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু।
তাইতো ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবে স্থানীয় বিনোদন পিয়াসীদের ভিড় বাড়ছে। ঈদের ছুটির প্রতিদিন বিকেলে রোদের তাপ কমতে শুরু করলেই উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসতে থাকে হাজার হাজার মানুষ। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা অবধি এ বাইপাস সড়ক ও ব্রীজ সংলগ্ন এলাকায় আগত দর্শনার্থীরা ঘুরে বেড়ান। আর এই সহ¯্রাধিক মানুষকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে রকমারি ুদ্র ভ্রাম্যমান দোকান। দর্শনার্থীদের কাছে ঝালমুড়ি বিক্রি করে নিজের ভালো আয়ের কথা জানালেন স্থানীয় ঝালমুড়ি ব্যবসায়ী জামান।
এই ব্রীজে ঝালমুড়ি, ফুচকা, আইসক্রিমসহ নানান মুখরোচক খাবার ছাড়াও রয়েছে শিশুদের বিভিন্ন খেলা ও কসমেটিক্সের ভ্রাম্যমান দোকান। এসব দোকানে এই ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার টাকা বিক্রিও হচ্ছে। ব্রীজের পাশেই রয়েছে দুপাশে সবুজ গাছ বিশিষ্ট আকা বাকা গ্রাম্য মাটির রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে হেটে বেরাচ্ছে প্রকৃতি প্রেমি মানুষ। উপভোগ করছে গ্রাম-বাংলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। তাই তো অনেকেই বিকেল হলেই স্ত্রী-সন্তান, পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনসহ নানা শ্রেণি-পেশার বিনোদন প্রেমীরা এখানে এসে আনন্দ আর হৈ-হুল্লোড় করেন। সুন্দর এই আনন্দঘন মুহূর্তকে স্মৃতিময় করে রাখতে অনেকেই ক্যামেরাবন্দী করছেন। আবার কেউবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেলফি তুলছেন। কেউবা আবার গলা ছেড়ে গাইছে গান ‘‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা’।
হাটতে হাটতে কথা হয় আবুল কালাম নামে এক যুবকের সাথে। তার বাড়ি উপজেলার বালিয়াদি গ্রামে। পড়া লেখা ও পারিবারিক কাজের চাপে তেমন একটা ঘুরা হয় না তাই ঈদের ছুটিতে বিকেল বেলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সমৃদ্ধ এ বাইপাস সড়কে। এখানে এসে প্রাকৃতিক পরিবেশে, সবুজের খোলা হাওয়ায় ঘুরতে ভালোই লাগছে তার। তার মতো ঘুরতে এসেছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার যুবক যুবতীরা। কোহিনূর জাহান জানান, তিনি ঢাকায় লেখাপড়া করেন। তাই এলাকায় খুব বেশি আসা হয় না। ঈদের ছুটিতে ঘুরতে বেড়িয়েছেন। নিজের এলাকায় এত সুন্দর স্পট আছে তার জানা ছিল না বলেও তিনি জানান।
অনেকে ইচ্ছে করলেই দূরে কোথাও বেড়াতে যেতে পারেন না। অনেকের অর্থ থাকলেও সময় হয় না। তাই কম সময়ে এখানে বেশি বিনোদন ও সৌন্দর্য সকলকে বিমোহিত করার মত। উপজেলার বিনোদন বঞ্চিত মানুষের কাছে এটি এখন অন্যতম আকর্ষণে পরিণত হছে। তাইতো সময় পেলে অনেকেই মনটাকে সতেজ করতে ছুটে চলেছেন এই বিনোদন সমৃদ্ধ বাইপাস সড়কে।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী জানান, জনগণের নিরাপত্তার জন্য সকাল থেকে সন্ধা রাত পর্যন্ত এই বাইপাস সড়কে পুলিশ মোতায়ন রয়েছে। যাতে এখানে কোন ধরনের অপ্রীতকর ঘটনা না ঘটে, সেদিকে নকলা থানা পুলিশ সব সময়ই সর্তক।