জীবনঘনিষ্ঠ ধর্ম ইসলামে সকল বিধানের স্বরূপ, আদায়ের পদ্ধতি ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে।
তাই কুরবানি আদায়ের সকল বিধানও আমরা পেয়ে যাই কুরআন ও হাদিসের বর্ণনায়। আসন্ন কুরবানির জরুরি কিছু বিধান পাঠকদের জ্ঞাতার্থে উল্লেখ করা হলো-
ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে কুরবানির সময় তিন দিন। যারা প্রথম দিন কোনো কারণে কুরবানি করতে পারেননি, তাদের জন্য ঈদের পরের দুই দিন তথা ১১ ও ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে কুরবানি করার সুযোগ রয়েছে।
তাই শুধু একদিনই নয় বরং ১০ জিলহজ ঈদুল আজহার দিনসহ আরো দুইদিন কুরবানি করা যাবে। জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ঈদের নামাজ পড়ার পর থেকে শুরু করে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগপর্যন্ত কুরবানি করা যাবে। তবে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের পর কুরবানি বৈধ নয়।
যাদের ওপর জুমা ও ঈদের নামাজ ওয়াজিব তাদের জন্য ঈদের নামাজের আগে কুরবানি করা জায়েজ নয়। অবশ্য বৃষ্টিবাদল বা অন্য কোনো ওজরে যদি প্রথম দিন ঈদের নামাজ না হয় তাহলে ঈদের নামাজ আদায় পরিমাণ সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর ওই দিনেও কুরবানি করা জায়েজ।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- ‘যে ব্যক্তি ঈদের নামাজের পূর্বে কুরবানির পশু জবাই করবে সেটা তার নিজের জন্য সাধারণ জবাই হবে। আর যে নামাজ ও খুতবার পর জবাই করবে তার কুরবানি পূর্ণ হবে এবং সে-ই মুসলমানদের রীতি অনুসরণ করেছে।’
জিলহজের ১০ ও ১১ দিবাগত রাতেও কুরবানি করা জায়েজ। তবে দিনে কুরবানি করাই ভালো।
কেউ যদি কুরবানির দিনগুলোতে ওয়াজিব কুরবানি দিতে না পারে তাহলে কুরবানির পশু ক্রয় না করে থাকলে তার ওপর কুরবানির উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব।
আর যদি পশু ক্রয় করে থাকে, কিন্তু কোনো কারণে কুরবানি দেওয়া হয়নি তাহলে ওই পশু জীবিত সদকা করে দিবে।
তবে যদি (সময়ের পরে) জবাই করে ফেলে তাহলে পুরো গোশত সদকা করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে গোশতের মূল্য যদি জীবিত পশুর চেয়ে কমে যায় তাহলে যে পরিমাণ মূল্য হ্রাস পাবে তা-ও সদকা করতে হবে।
তথ্যসূত্র: সহীহ বুখারি, সহীহ মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, ইলাউস সুনান-খণ্ড ১৭, রদ্দুল মুহতার-খণ্ড ৪।