পবিত্র ঈদুল ফিতরের লম্বা ছুটিতে নাড়ীর টানে বাড়ী ফিরেছে শেরপুরের কর্মজীবী মানুষ। পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ শেষে সবাই নগর জীবনের ব্যস্ততাকে ছুটি জানিয়ে ভীড় করছে শেরপুরের বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে। ঈদের ২য় দিন আজ মঙ্গলবার শেরপুরের বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
আজ সকাল থেকেই পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী অবকাশ কেন্দ্র। শুধুমাত্র শেরপুর জেলার স্থানীয় মানুষ জনই নয় শেরপুরের বাহিরের এলাকা থেকেও নিজস্ব বাহন বা ভাড়া করা গাড়ীতে পরিবার পরিজন নিয়ে সবুজের সান্নিধ্যে এসেছেন অসংখ্য মানুষ। গজনী অবকাশ কেন্দ্রও যেন সেজেছে নিজের আপন ভঙ্গিমায়, ফিরে পেয়েছে নিজের যৌবন।
গজনীতে ঘুরতে আসা কলেজ ছাত্রী শিমু জানান, এর আগেও বেশ কয়েকবার গজনীতে এলেও ঈদের দিন এখানে কাজিনদের নিয়ে ঘুরতে আসলে ভালো লাগে। কোলাহলমুক্ত গজনীতে তাই সবাই মিলে আজকেও ঘুরতে এসেছি।
গজনী অবকাশে শুধু সময় কাটানোই নয় এখানকার শিশু পার্কে শিশুদের ভীড় ছিল লক্ষ্য করার মত। সংস্কারাধীন পেডেলবোটে ভ্রমণের সুযোগ না থাকলেও ভীড় ছিল ওয়াচ টাওয়ার, পাতালপুরী ও গারো মা ভিলেজের প্রবেশপথে।
এদিকে যানজট আর কোলাহল মুক্ত পরিবেশে ঈদের আনন্দকে উপভোগ করতে নালিতাবাড়ীর মধুটিলা ইকোপার্কে দলবেঁধে ভীড় করছেন প্রকৃতিপ্রেমী দর্শণার্থীরা। প্রকৃতির সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতে ইকোপার্কের ভেতরে ছোট বড় সব বয়সী মানুষের ভীড় ছিল লক্ষণীয়।
ইকোপার্কে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসা সরকারী চাকুরীজীবি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সবুজের অরণ্যে পরিবার নিয়ে সময় কাটাতে এসেছি এখানে। আরো একটু নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করলে ভালো হতো।
আনন্দের এই দিনে দূরদূরান্ত থেকে বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকারে ভ্রমনপিপাসুরা ছুটে গেছেন জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে। শ্রীবরদী উপজেলার সম্ভাব্য পর্যটন স্পট রাজার পাহাড় ও সদর উপজেলার অর্কিড পর্যটন প্রকল্পেও দর্শণার্থীদের বেশ আনাগোনা লক্ষ্য করা গেছে।
পর্যটকদের নিরাপত্তায় প্রতিটি পর্যটন স্পটে পুলিশ, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল দেখা গেছে চোখে পড়ার মতো। গজনী অবকাশে অতিরিক্ত পর্যটকদের আগমন এবং নিরাপত্তায় সাদা পোশাকেও পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে বলে জানালেন ঝিনাইগাতী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান।
ঈদের আনন্দে প্রকৃতির বুকে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। ঈদ আসে আনন্দ, ভ্রাতৃত্ব আর সৌহার্দের বার্তা নিয়ে। তাই এই ছুটির দিনে প্রকৃতির বুকে গড়ে উঠা পর্যটন কেন্দ্রেগুলোতে সবাই যেনো এক কাতারে সামিল। জীবনের ব্যস্ততাকে পেছনে ফেলে একটু স্বস্তির আশায় ছুটে যান প্রকৃতির নিবিড় শীতল ছায়ায়।
উল্লেখ্য শেরপুর জেলার পর্যটনকে সবার কাছে পরিচিত করতে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে ব্র্যান্ডিং শেরপুর বিষয়ক বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। “পর্যটনের আনন্দে, তুলসীমালার সুগন্ধে-শেরপুর” এই স্লোগানকে সামনে রেখে শেরপুর জেলা প্রশাসন এবং “আমাদের শেরপুর, আমরাই চিনাবো” স্লোগানকে সামনে রেখে শেরপুর টাইমস টিভি ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে।