কেয়ামত কখন হবে তা একমাত্র মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালাই জানেন। এ সম্পর্কে তিনি ছাড়া কারো সুনির্দিষ্ট তারিখ বা জ্ঞান নেই। হাদিসে জিবরিলে এসেছে-
‘একবার আগন্তুক সেজে হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঈমান, ইসলাম ও ইহসান সম্পর্কে প্রশ্ন করেন; আর বিশ্বনবী সেসব প্রশ্নের জবাব দেন, তখন হজরত জিবরিল (আ.) সেসব উত্তরে ‘সত্য বলেছেন’ বলে সত্যয়ন করেন।
অতঃপর হজরত জিবিরল (আ.) প্রশ্ন করেন, কেয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? এ প্রশ্নের উত্তরে বিশ্বনবী বলেন, ‘এ বিষয়ে যাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে তিনি প্রশ্নকারীর চেয়ে অধিক কিছু জানেন না।’
তখন জিবরিল বললেন, তাহলে কেয়ামতের নিদর্শনসমূহ সম্পর্কে বলুন। তখন বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
> দাসি তার আপন মুনিবকে প্রসব করবে।
> তখন দেখা যাবে, খালি পায়ের উলঙ্গ-কাঙ্গাল মেষ পালনকারীরা বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণ করে গর্ব ও অহংকার করবে।
হজরত জিবরিল আলাইহিস সালাম বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ২৪ হাজার বার এসেছেন বলে জানা যায়। একবার বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন-
হে জিবরিল! আমার ইন্তেকালের পর আপনি কতবার দুনিয়াতে আসবেন?
জিবরিল বললেন, ‘১০ বার আসব এবং দুনিয়া থেকে ১০টি জিনিস তুলে নেব। আর ১০তম জিনিসটি তুলে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হজরত ইসরাফিল আলাইহিস সালাম সিঙ্গায় ফুঁ দেবেন এবং কেয়ামত শুরু হবে।
১০টি জিনিস হলো-
>> বরকত তুলে নেয়া হবে।
>> ইবাদতের স্বাদ বা মজা তুলে নেয়া হবে।
>> পরস্পরিক মহব্বত তুলে নেয়া হবে।
>> লজ্জা তুলে নেয়া হবে।
>> হক বা সঠিক বিচার তুলে নেয়া হবে।
>> সবর বা ধৈর্য তুলে নেয়া হবে।
>> আলেমদের থেকে সত্য কথা তুলে নেয়া হবে। যারা হক কথা জানলেও তা বলবে না।
>> ধনীদের অন্তর থেকে সৎ সাহস উঠিয়ে নেয়া হবে।
>> ঈমানদার ব্যক্তি থাকেবে না। ঈমান উঠে যাবে।
>> ক্বারিদের অন্তর থেকে কোরআন তুলে নেয়া হবে।
যখনই দুনিয়া থেকে মানুষের ঈমান ও কোরআন উঠিয়ে নেয়া হবে তখনই কেয়ামত শুরু হবে।
সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায়, উল্লেখিত ১০টি জিনিসের অনেকগুলোই আজ অনুপস্থিত। কোথাও এগুলোর পরিপূর্ণ অস্তিত্ব নেই। আবার কিছু জিনিস একেবারেই উঠে গেছে।
মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালা মুসলিম উম্মাহকে ঈমান ও কোরআনকে বুকে ধারণ করে সত্য পথে চলার তাওফিক দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।