ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার ৩৯৯ বর্গকিলোমিটার এলাকার অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। প্রায় ৭৩ হাজার কৃষক পরিবারের এই উপজেলার মাটি লাল। এই মাটি মানেই প্রাচীনত্ব। ফুলবাড়িয়া উপজেলার অধিকাংশ এলাকা মধুপুর, ভাওয়ালের লালমাটি দ্বারা গঠিত ভূমির সম্প্রসারিত অংশ। এই মাটিতে এখন অন্য ফসলের পাশাপাশি ব্যাপকহারে ফলছে লেবুজাতীয় ফল। কলম্বো জাতের লেবু গুণে-মানে দেশ জয় করে এখন যাচ্ছে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও ইতালি।
ফুলবাড়িয়ার এনায়েতপুর লেবুচাষের জন্য প্রসিদ্ধ। এছাড়া অন্য ইউনিয়ন বা গ্রামেও মৌসুমি ফসলের জায়গা দখল করছে লেবু।
সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় অধিকাংশ কৃষক অন্য আবাদের পাশাপাশি ছোট এক খণ্ড জায়গা হলেই তাতে চাষ করছেন লেবু।
এনায়েতপুর ও পাহাড় অনন্তপুরের কয়েকজন চাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানকার লেবু চলতি বছর থেকে যাচ্ছে লন্ডনসহ ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে লেবু চাষে আগ্রহ আরো বাড়ছে। তারা বলেন, আগে এলাকায় লেবু বিক্রি করতাম ৩০ টাকা বা ৫০ টাকা কেজিতে। ১২০ কেজির বস্তা বিক্রি হতো দুই হাজার টাকা। গরমের সিজন ছাড়া দাম পাওয়া যেত না।
এ বিষয়ে ফুলবাড়িয়া উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আবু রায়হান বলেন, আমাদের উপজেলার এনায়েতপুর ও পার্বতীপুর গ্রাম থেকে মূলত লেবু ইউরোপে যাচ্ছে। ইউরোপের বাইরেও যাচ্ছে। মূলত যাচ্ছে বিষমুক্ত লেবু। এসব প্রক্রিয়ায় কোয়ারেন্টাইনও থাকছে। যে লেবুটা রফতানি হচ্ছে সেটা দলবদ্ধ চাষির।
‘এক কেজি লেবু প্রথম দিকে তারা ১০০ টাকা দিয়েছেন। শেষে ৫০ টাকায় এসেছে। তারা কেজি হিসেবে নেন। এক কেজিতে ১২টা ধরে। লোকাল মার্কেটে এই ১২টি লেবুর দাম যখন ৪০ টাকা ছিল তখন এক্সেপোর্টার দিয়েছেন ১০০ টাকা। এটা বাড়ে-কমে। ২০২০ সালের জুনের পর থেকে লেবু নিচ্ছেন এক্সপোর্টাররা।
ফুলবাড়িয়া উপজেলায় এখন মোট ৩৮০ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ হচ্ছে বলে জানান উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে এস আর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রফতানিকারক মো. শাহাবুদ্দিন বলেন, আমরা শুধু এ গ্রেডের লেবু নেই। বি গ্রেড নেই না। বাছাই লেবুটা নেই বলে দামটাও বেশি দেই। এসব লেবু মূলত যাচ্ছে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে। তবে কলম্বো লেবুর চেয়ে জারা লেবুর চাহিদা বেশি।
তবে এই রফতানিকারক মনে করেন, চীন-জাপানে প্রচুর লেবুর চাহিদা আছে। কিন্তু সরকারিভাবে চুক্তি না থাকায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। যদি চীনের দরজা বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত হয় তাহলে আরো বেশি লেবু রফতানি করা যাবে।
#ডেইলি বাংলাদেশ