ক্ষমতায় আসার পর গত ১২ বছর আওয়ামী লীগ সরকার তাদের ‘গডফাদারদের’ মাধ্যমে দেশে ‘হরিলুট’ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শুধু তাই নয়, তাদের এ হরিলুটের খবর দেশের গণমাধ্যমগুলো লিখতে শরম পায় কি না তা তিনি জানতে চেয়েছেন।
আজ বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘এককালে সেলিম প্রধান মামুনের লোক ছিল। মামুনের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর গত এক দশক ধরে সেলিম প্রধান কার সঙ্গে সংসার করে অনলাইন ক্যাসিনোর ডন হয়েছে তা-তো র্যাব বললো না। বর্তমানে সেলিম প্রধানের সঙ্গে কোন কোন নেতা ঘনিষ্ঠ তা কোনো গণমাধ্যমে দেখলাম না। কোন কোন নেতা তার গডফাদার তা তো বললেন না? সেলিমের আগের সংসারে কি হয়েছে তাই নিয়েই চলছে টানাটানি-যার কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘কেবল সেলিম প্রধানই নয়, যাদেরকে এ পর্যন্ত আটক করা হয়েছে সবাই নাকি এক দশক আগে ছিলেন বিএনপির লোক। সেই সময় তারা কি করেছে সেই কেত্তন চলছে দলদাস মিডিয়াগুলোতে। গত ১২ বছর তারা যে আওয়ামী লীগের গডফাদারের মাধ্যমে হরিলুট করেছে তার কাহিনি কই? সেগুলো বলতে-লিখতে কি শরম করে?’
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘একটি পত্রিকা লিখেছে, গোয়েন্দা সংস্থার কাছে জিজ্ঞাসাবাদে জি কে শামীম বলেছেন যে, আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক সাত মন্ত্রী এবং ২৩ এমপিকে তিনি নিয়মিত টাকা দিতেন। তারা ছিল যুবলীগ নেতা শামীমের বিজনেস পার্টনার। আমাদের প্রশ্ন তারা কারা? নাম বলেন না কেন? তাদের এখনকার কথাবার্তায় মনে হচ্ছে পুরো দেশটাই ভরে গেছে তারেক রহমানে। দেশ থেকে ক্ষমতাসীনরা নাই হয়ে গেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, ‘রাজধানীতে গত ১৩ বছর যাবৎ ডজন ডজন ক্যাসিনো গড়েছে যুবলীগ ও তাদের গডফাদাররা। এই সরকারের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে দুর্বৃত্তরা টাকার কুমির হয়েছে। আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগের চাঁদাবাজী ও দুর্নীতির বৃত্তান্ত শুনে দেশবাসী অত্যুগ্র বিস্ময়ে হতবাক হয়েছে। দুর্নীতির ইতিহাসে এ এক স্বতন্ত্র ও ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘সেলিম প্রধান, খালেদ ভূঁইয়া, শামীম, ফিরোজরা সরকারে থাকা তাদের গডফাদারদের ইচ্ছাতেই টাকা পাচার করেছে। গডফাদার পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকেই তারা দীক্ষা পেয়েছে। দুর্নীতি, অনাচার, আর অনিয়মে গা ভাসিয়ে দিয়েছে। ফলে দুই একটা ছোট মাছ ধরে এই সরকারের রোগ সারানো সম্ভব নয়।’
রিজভী আরও বলেন, ‘জনগণের টাকায় পরিচালিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও নামানো হয়েছে বিএনপি ও তারেক রহমানের চরিত্র হননের অপপ্রচারণায়।’
গণমাধ্যম প্রকাশিত সংবাদের বরাত দিয়ে রিজভী বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ক্যাসিনোর সূচনা ঘটে। তখন ক্যাসিনো আমদানি করেছে যুবলীগের সম্রাটসহ অন্যান্য নেতারা। তারাই প্রথমে বিভিন্ন ক্লাব ও পরে সারা দেশে এই ক্যাসিনো কালচার ছড়িয়েছে। তার আগে ক্যাসিনো সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না এদেশের মানুষের।’