আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়ে কিছু তো পাননি, বরং তার দল ভাঙা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এরশাদ বলেন, ১৯৯৬ সালে জেলে আমার কাছে মধ্যরাতে লোক পাঠিয়েছিল বিএনপি। সমর্থন চেয়ে বলেছিল- প্রধানমন্ত্রী হতে চাইলেও তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু আমি আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিই, তারা সরকার গঠন করে। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে কেউ সুবিচার করেনি। আমাদের সহযোগিতা নিয়ে তিনবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেছে। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে তারা এ কথা ভুলে যায়। ৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের পরিসংখ্যান তুলে ধরে সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ওই নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছিল ১৩৪ আসন, জাতীয় পার্টি পায় ১৬ আসন আর আওয়ামী লীগ ১৪৪ আসন পায়, জামায়াতের ছিল তিনটি। এরশাদ বলেন, আমরা বিএনপির সঙ্গে যোগ দিলে জামায়াতের তিনটিসহ ১৫৩টি আসন নিয়ে জয়ী হতো বিএনপি। আমার প্রধানমন্ত্রী হওয়ারও অফার (প্রস্তাব) ছিল। কিন্তু সমর্থন দিয়েছিলাম আওয়ামী লীগকে। কিন্তু আমি কি পেলাম! আমার দলের মহাসচিব আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে দিয়ে আমার দল ভাঙা হল। তবে অনেক অত্যাচারের পরও জাতীয় পার্টি এখন রাজনীতিতে ফ্যাক্টর বলে উল্লেখ করেন দলটির চেয়ারম্যান এরশাদ। ১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। ৩২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার রাজধানীতে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে জাতীয় পার্টি। বেলা ১১টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এরপর জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রওশন এরশাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে এরশাদের নেতৃত্বে সমবেত নেতাকর্মীরা রাজধানীতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দ শোভাযাত্রা বের করেন। এতে হুড খোলা গাড়িতে চড়ে অংশ নেন এরশাদ। তার নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে জাতীয় পার্টি। এ মহাসমাবেশ থেকে আগামী দিনের কর্মসূচি ও পরিকল্পনা ঘোষণা করবেন এরশাদ।