জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেছেন মামলার প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, চারদলীয় জোটের সময় অযোগ্যতার কারণে অব্যাহতি পাওয়া বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদকে দিয়ে উদ্দেশ্যমূলক এ মামলা দায়ের করিয়েছে স্বার্থান্বেষী মহল। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি এ মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে অসমাপ্ত বক্তব্য দেন। এর আগে তিনি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেন। এই ব্ক্তব্য শেষ হওয়ার পর তিনি জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিতে গিয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
এর আগে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা ২৩ মিনিটে পুরান ঢাকার বকশীবাজারস্থ আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে উপস্থিত হন। ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান বেলা ১১ টা ২৭ মিনিটে এজলাসে ওঠেন। বক্তব্যে খালেদা বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা নূর আহমেদ আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ না পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেননি। কিন্তু মামলার দ্বিতীয় তদন্ত কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। বক্তব্য শেষ হওয়র পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ। আমাদের ধারণা ছিল না তিনি আজ এতো বক্তব্য রাখতে পারবেন। আমরা উভয় মামলায় জামিন স্থায়ীর আবেদন করেছি। তিনি পালিয়ে যাবেন না। ওয়ান ইলেভেনে যেখানে সেনাবাহিনী তাকে জোর করে বিদেশে পাঠাতে পারেনি, সেখানে এখনতো প্রশ্নই ওঠে না। এ সময় দুদকের প্রসিকিউটর মোশারফ হোসেন কাজল বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) এর আগেও ৫ দিন বক্তব্য দিয়েছেন। আজ ষষ্ঠ দিন। তিনি মামলার বিষয়ে বক্তব্য না দিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। সময়ের ব্যাপারে আমাদের আপত্তি আছে। তার আরও বক্তব্য থাকলে লিখিত দিতে পারেন। আর আমাদের জামিন স্থায়ীর বিষয়েও আপত্তি আছেন। এরপর জয়নুল আবেদীন বলেন, রাজনৈতিক মামলা, সেখানে রাজনৈতিক বক্তব্যতো আসবেই। বুঝতে হবে, এই মামলাটা ওয়ান ইলেভেনের সময় দায়ের হয়েছে। এরপর বিচারক বলেন, আমাদের আরও কাজ আছে। এরপর তিনি খালেদা জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি, ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থণে আংশিক বক্তব্য দিয়েছিলেন। এরপর বিচারক মামলাটিতে রি-কলের সাক্ষীদের খালেদা জিয়ার পক্ষে করা জেরা বিচার পড়ে শোনান। এরপর তাকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি দোষী না নির্দোষ? উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আপনি আগে একদিন মামলাটিতে আত্মপক্ষ শুনানিতে আংশিক বক্তব্য দিয়েছিলেন। আর বক্তব্য দিবেন কি না? খালেদা বলেন, দিবো। এরপর বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কোনো কাগজপত্র দাখিল করবেন কি না। উত্তরে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী প্রয়োজন হলে করবেন বলে জানান। এরপর বিচারক জামিন স্থায়ীর আবেদন নামঞ্জুর করে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ওইদিন পরবর্তী দিন ধার্য করেন।