রাজধানীর অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র ধানমণ্ডি লেক। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসেন এখানে সময় কাটাতে।
কেউ আসেন বেড়াতে কেউ হাঁটার জন্য। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রায় সবসময়ই হাজারও মানুষের সমাগম থাকে লেক এলাকায়। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ অবসর সময় কাটাতে আসেন ধানমণ্ডি লেকে।
প্রাকৃতিক পরিবেশের স্বাদ নিতে এসে ধানমণ্ডি লেকে হিজড়াদের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ দর্শনার্থীদের।
এখানে বেড়াতে আসা ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে জোর করেই টাকা নিচ্ছে তারা। টাকা না দিলে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল, অশালীন অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে বিব্রত পরিস্থিতিতে ফেলে লেকে ঘুরতে আশা দর্শনার্থীদের।
কখনও একা একা বা কখনও দলবদ্ধ হয়ে টাকা তুলতে আসে তারা। উদ্ভট সাজগোজ করে বীরদর্পে ঘুরে বেড়ায়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লেকের কোনো না কোনো প্রান্তে তাদের উপস্থিতি থাকে সরব।
তাদের হাত থেকে নিস্তার পাচ্ছে না লেকে বেড়াতে আসা নিয়মিত দর্শনার্থীরা। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও বাদ যায় না তাদের চাঁদাবাজির কবল থেকে।
পুরান ঢাকা থেকে ধানমণ্ডি লেকে বেড়াতে আসা আরিফ জানান, তিনি তার বান্ধবীকে নিয়ে লেকে ঘুরতে এসে হিজড়াদের কবলে পড়েন। তার কাছে প্রথমে ৫০ টাকা চাইলে তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে হিজড়ারা তার বান্ধবীর সামনে তার সঙ্গে দূর্ব্যবহার ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শাহনেওয়াজ বলেন, তিনি তার বান্ধবীসহ ঘুরতে এসেছেন ধানমণ্ডি লেকে। হিজড়ারা তাদের কাছে প্রথমে ২০ টাকা চায়। তাদের কাছে টাকা ভাংতি না থাকায় ১০০ টাকা দিলে হিজড়ারা পুরো টাকাটাই নিয়ে চলে যায়। টাকা চাইতে গেলে অশালীন অঙ্গভঙ্গি শুরু করে তারা।
মানসম্মানের ভয়ে আর হিজড়াদের সঙ্গে তর্কে না গিয়ে চলে আসেন তারা।
শুধু তাই নয়, হিজড়াদের জন্য এমন অনেকেই পড়ছেন বিব্রতকর অবস্থায়। মানসম্মানের ভয়ে ও সঙ্গে থাকা লোকদের নাজেহাল হওয়া এড়ানোর জন্য সবাই মুখ বুজে সহ্য করছেন তাদের এ অত্যাচার।
লেকে হাঁটতে আসা মধ্যবয়স্ক ইসমাঈল হোসেন বলেন, মাঝে মাঝেই দেখি অনেকেই তাদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ায়, কথা কাটাকাটি করে বাজে কথা বলে টাকা নেয়, এদের (হিজড়া) কিছু বলারও নেই।
লেকে বেড়াতে আসা আরও অনেকেই জানান, তারাও পড়েছেন এ বিড়ম্বনায়। তারা জানান, লেক কর্তপক্ষ যদি ব্যবস্থা নেয় তাহলেই এ বিড়ম্বনা ও আতঙ্কের সমাধান হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ধানমণ্ডি লেকে কর্মরত ধানমণ্ডি থানার এএসআই মো. এরশাদ বলেন, দেখেছি হিজড়ারা টাকা তোলে। তবে জোর করে টাকা তোলা বা দর্শনার্থী হেনস্থার ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। যদি অভিযোগ আসে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
ধানমণ্ডি থানার ওসি আবদুল লতিফ বলেন, হিজড়ারা উত্ত্যক্ত করছে এমন অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কেউ মোবাইলে অভিযোগ দিলেও সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠানো হয়।
সূত্র: যুগান্তর।