নতুন আইফোনে লাইটনিং চার্জিং পোর্ট ব্যবহার করা হবে না বলে নিশ্চিত করেছে অ্যাপল। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাধ্য করার পর এমন সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। নতুন আইফোন হ্যান্ডসেট আগামী সপ্তাহে বাজারে আসবে।
মঙ্গলবার বার্ষিক এক অনুষ্ঠানে আইফোন ১৫ উন্মোচন করার পরে এই টেক জায়ান্ট জানিয়েছে, তারা তাদের আনুষঙ্গিক কোন পণ্যে চামড়া আর ব্যবহার করবে না এবং ২০৩০ সালের মধ্যে তারা তাদের ব্যবসাকে কার্বন নিরপেক্ষ করে তুলবে।
কিন্তু একজন প্রযুক্তি বিশ্লেষক বলেছেন, ‘সংবাদ শিরোনাম হতে পারে’ এমন চমক দেওয়ার মতো কোন তথ্য অ্যাপলের কাছ থেকে এবার না আসায় অনেকেই হতাশ হতে পারেন। আসলেই কি তাই?
গত বছর বাজারে আসা আইফোন ১৪ সিরিজের তুলনায় নতুন সিরিজে ডিজাইন এবং ক্যামেরা সিস্টেমে বেশ কিছু পরিবর্তন আনছে অ্যাপল। তা ছাড়া আগের সিরিজের তুলনায় আইফোন ১৫ উল্লেখযোগ্যভাবে আপগ্রেডেড থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। কেননা, এটিতে নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করেছে অ্যাপল।
কাজেই আইফোন ১৪ থেকে নতুন আইফোন ১৫ সিরিজের মোবাইল ফোনের মধ্যে বেশ কয়েকটি বড় পরিবর্তন থাকছে।
দ্রুতগতির চিপ
১৫ প্রো মডেলে এ১৭ প্রো নামে নতুন অ্যাপল সিলিকন চিপ ব্যবহার করা হয়েছে। এই চিপটিতে ১৯ বিলিয়ন ট্রানজিস্টর আছে এবং এর ফলে ১৫ প্রো মডেলটি তার পূর্বসূরির তুলনায় ১০ গুণ বেশি গতিসম্পন্ন হবে। যদিও নতুন আইফোনে জিপিউ’র প্রতি বেশি জোর দিয়েছে অ্যাপল।
এ১৭ প্রো চিপের নতুন সিক্স-কোর জিপিইউ এ যাবৎকালে আইফোনে ব্যবহৃত সবচেয়ে শক্তিশালী জিপিইউ, যা আগের তুলনায় ২০ গুণ গতিসম্পন্ন। অ্যাপল বলছে, নতুন ও উন্নত জিপিইউর ফলে আইফোনের গেমিং পারফরম্যান্সের উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে। ১৫ প্রো ম্যাক্স মডেলেও একই চিপ ব্যবহার করা হয়েছে, যা স্বাভাবিকভাবেই এর পূর্বসূরির তুলনায় বেশি শক্তিশালী।
ডিসপ্লে ও ফ্রেম
ডায়নামিক আইল্যান্ড ফিচার গত বছর শুধু প্রো মডেলগুলোতে থাকলেও এবার ১৫ ও ১৫ প্লাসেও এই ফিচারটি যুক্ত করা হয়েছে। ১৫ মডেলের ডিসপ্লের আকার ৬ দশমিক ১ ইঞ্চি এবং ১৫ প্লাস মডেলের ডিসপ্লের আকার ৬ দশমিক ৭ ইঞ্চি।
আইফোন ১৫ এবং ১৫ প্লাস-এ স্ক্রিন আরো বেশি উজ্জ্বল করা হয়েছে, ক্যামেরা সিস্টেমও আগের চেয়ে উন্নত। এছাড়া আইফোন ১৫ প্রো এবং প্রো ম্যাক্সে টাইটানিয়াম ফ্রেম যুক্ত করা হয়েছে, এর মানে হচ্ছে এটির শক্তি আগের তুলনায় বেড়েছে।
রঙ
বেশ কিছুদিন আগেই প্রথাগত সাদা রঙের সীমাবদ্ধতা থেকে বের হয়ে এসেছে অ্যাপল। ১৫ ও ১৫ প্লাস মডেলগুলো নতুন গোলাপি, হলুদ, নীল ও কালো রঙে পাওয়া যাবে। আর ১৫ প্রো মডেল পাওয়া যাবে ব্ল্যাক টাইটানিয়াম, হোয়াইট টাইটানিয়াম, ব্লু টাইটানিয়াম ও ন্যাচারাল টাইটানিয়াম রঙে।
ক্যামেরা
নতুন আইফোন ১৫ প্রো মডেলটি ৪৮ মেগাপিক্সেল প্রাইমারি সেন্সর সহ আসবে। পাশাপাশি থাকবে আল্ট্রা ওয়াইড লেন্স ও টেলিফটো ক্যামেরা সেন্সর। এই ক্যামেরাগুলি হতে পারে ৪৮ মেগাপিক্সেল সনি আইএমএক্স৮০৩ ১/১.৩ ইঞ্চি প্রাইমারি ক্যামেরা (এফ/১.৮), ১২.৭ মেগাপিক্সেল টেলিফটো লেন্স (এফ/২.৮) এবং ১৩.৪ মেগাপিক্সেল আল্ট্রাওয়াইড লেন্স (এফ/২.২)।
নতুন অ্যাকশন বাটন
প্রো এবং ম্যাক্সে আগের মিউট সুইচ এর জায়গায় এখন একটি ‘অ্যাকশন বাটন’ রয়েছে, যার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ফাংশন ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করা যাবে।
দাম
যুক্তরাজ্যে আইফোন ১৫ এর দাম ৭৯৯ পাউন্ড বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় এক লাখ নয় হাজার টাকা থেকে শুরু হবে। আর আইফোন ১৫ প্রো এর দাম ৯৯৯ পাউন্ড থেকে শুরু হবে অর্থাৎ এক লাখ ৩৬ হাজার টাকার বেশি।
পিপি ফোরসাইট এর প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্লেষক পাওলো পেসক্যাটর বলেন, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে সংকটের এই সময়টাতে নতুন ডিভাইসের জন্য টাকা বের করতে ভোক্তাদের রাজি করানোটা সহজ হবে না।