বিশিষ্ট আইনজীবী আমিনুল ইসলামের ১২ তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ ১৬ মার্চ। দেশের প্রথিতযশা এই আইনজীবী পূর্ব পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের বিচার বিভাগের প্রাক্তন সদস্য হিসেবে শেরপুরের একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন । মরহুমের রুহের মাগফিরাতের জন্য শেরপুরের বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসায়
দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
আমিনুল ইসলাম শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার চিথলিয়ার সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবার জোতদার বাড়ীর সন্তান, ১৯২৯ সালে শেরপুর সদর উপজেলার সন্যাসীরচর গ্রামে নানা নয়ান উল্লাহ মাষ্টারের বাড়ীতে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম আইনজীবী আফতাবউদ্দিন আহমেদ ১৯২৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতকোত্তীর্ণ হয়ে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার জামালপুর মহকুমার শেরপুর বারে প্রথম মুসলিম আইনজীবী হিসাবে যোগদান করেন। তিনি দীর্ঘ ৪০ বছর সুনামের সঙ্গে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। সেসময় দীর্ঘদিন তিনি সরকারী আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫০ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তিনি শেরপুর পৌরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
মরহুম আমিনুল ইসলাম ১৯৪৫ সালে শেরপুর ভিক্টোরিয়া একাডেমী থেকে মেট্টিক্যুলেশন, ১৯৪৭ সালে ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক, ১৯৪৯ সালে স্নাতক ও ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়ে বাবার সঙ্গে ১৯৫৬ সালে শেরপুর বারে যোগদান করে আইনজীবী হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯৫৯ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের বিচার বিভাগীয় সদস্য নিযুক্ত হয়ে মুন্সেফ হিসেবে স্বল্পকালীন সময়ে চাকরি করেন রাজশাহীতে। বাবা-মায়ের আদেশে লোভনীয় সরকারী চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে আবারো আইন পেশায় যোগদান করেন। তিনি ছিলেন জামালপুর মহকুমার সর্বপ্রথম ইপিসিএস বিচার বিভাগের সদস্য। তিনি দীর্ঘ ৫০ বছর সুনামের সঙ্গে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। ২০০৮ সালের ১৬ মার্চ তিনি ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তিনি পেশাজীবী হিসাবে আমৃত্যু শেরপুর বারের আইনজীবীদের শীর্ষে ছিলেন। তিনি দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় শেরপুর বারের সভাপতি ও সরকারী আইনজীবীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি আইন পেশার পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
আমিনুল ইসলামের তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। বড় ছেলে আইনজীবী সালাহউদ্দিন আহমদ শাহরিয়ার (লিটন) । তিনি শেরপুর জেলা বারের হিউম্যান রাইটস মনিটরিং সেলের প্রথম সাধারণ সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের লিগ্যাল এডুকেশন এন্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের একজন মানবাধিকার বিষয়ক প্রশিক্ষক ও জাতিসংঘ স্বরণার্থী বিষয়ক আইনজীবী। মেঝ ছেলে এস.এ. শাহরিয়ার রিপন একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার প্রধান নির্বাহী ও আলোকচিত্রী। ছোট ছেলে শাকিল আহমেদ শাহরিয়ার মিল্টন সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত। তিনি শেরপুর জেলার প্রথম সংবাদ সংস্থা ও অনলাইন সংবাদপত্র শেরপুর টাইমসের সম্পাদক এবং বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়ার একজন লেখক। বড় মেয়ে আফরিনা ফেরদৌস, মেঝ মেয়ে আফরোজা ফেরদৌস ও ছোট মেয়ে আশরাফা ফেরদৌস। স্ত্রী সেলিমা ইসলাম রাইফেল শ্যুটিংয়ে এক সময়ের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ছিলেন।