ইচ্ছা আর সততা থাকলে কম পুঁজিতে ব্যবসা করে সফল হওয়া যায় তাই প্রমান করলেন অনলাইনে সফল ব্যবসায়ী কিশোরী উদ্যোক্তা তানজিনা আক্তার লিজা। তানজিনা বলেন আমি অনলাইনে পণ্য বিক্রি করি না, বিশ্বাস বিক্রি করি। তানজিনার বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায়। তিনি “কিশোরগঞ্জের চ্যাঁপা শুটকি” নামে একটি ব্যতিক্রমী অনলাইন ব্যবসা করে সারাদেশে সাড়া ফেলে দিয়েছেন। অনলাইনে সঠিক পণ্য সঠিক সময়ে হাতে পেয়ে গ্রাহকরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তার এই সফলতার গল্প শুনুন নিজ মুখ থেকেই…
আমি তানজিনা আক্তার লিজা। বাবার বাড়ি ঢাকার ডেমরা এলাকায়। আমি কবি নজরুল সরকারি কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী। আমার স্বপ্ন ছিল আমি নিজে একটা কিছু করবো। সেই স্বপ্নের ধারাবাহিকতায় আমি অনলাইনে থ্রি পিছের ব্যবসা শুরু করি। কিন্তু ভালো গাইড লাইন না থাকায় এই ব্যবসা নিয়ে বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারিনি। তখনই হঠাৎ আমার বিয়ে হয়ে যায়। আমার শশুরবাড়ি কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায়। আমি “Entrepreneurship নিজের বলার মতো একটা গল্প ফাউন্ডেশন” অনলাইন ভিত্তিক প্লাটফর্মে যুক্ত ছিলাম। এই প্লাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা ইকবাল বাহার জাহিদ প্রতিদিন একটা করে সেশন দেয় যা নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি আবার সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হই। আমার শশুর বাড়ি এসে দেখলাম এখানে চ্যাঁপা শুটকির গুনগত মান অনেক ভালো। আমার শশুর বাড়ির পাশেই চ্যাঁপা তৈরি করা হয়। কিশোরগঞ্জের হাওরের দেশি জাতের পুঁটি মাছ দিয়ে তৈরি করেন এবং চ্যাঁপা তৈরিতে কোনো রকম ক্যামিকেল বা লবন ব্যবহার করেননা। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় চ্যাঁপার চাহিদা অনেক বেশি। আমি ভাবলাম যে আমি যদি এই চ্যাঁপা নিয়ে কাজ শুরু করি তাহলে দেশের সব জায়গায় লোকেরা ক্যামিকেলমুক্ত লবন ছাড়া এবং সুস্বাদু ঘ্রানের চ্যাঁপার স্বাদ নিতে পারবেন। আর আমিও আমার উদ্যোগটাকে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবো। এরপর আমি অনলাইনে একটা পেইজ খুলি, “কিশোরগঞ্জের চ্যাঁপা শুটকি” নামে। তখন থেকে আমার পথচলা শুরু হয়। প্রথমে আমি মাসে ১টা ২টা করে অর্ডার পেতাম। তখন ওই অর্ডার নিয়েই আমি খুশি ছিলাম যে আমাদের কিশোরগঞ্জের চ্যাঁপা আমি অনলাইনে বিক্রি করতে পারছি। এভাবে আস্তে আস্তে আমার পেইজটি মানুষের পরিচিত হতে থাকে আর আমার অর্ডারও বাড়তে থাকে। আমার মাথায় সবসময় একটা কথা কাজ করতো যে আমি সততার সাথে ব্যবসা করে যাবো। আমি পণ্য বিক্রি করবোনা, বিশ্বাস বিক্রি করবো। আলহামদুলিল্লাহ ১ বছরে এখন আমার মাসিক সেল ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা। এখন বাংলাদেশের ৬৪ জেলাতে আমার চ্যাঁপা শুটকি বিক্রি হচ্ছে। এমনকি দেশের বাহিরেও গেছে। আমি সবার কাছে দোয়া চাই সততার সাথে আমি যেন আমার উদ্যোগটাকে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারি।